৫টি অভ্যাস যা তোমাকে আরো ধৈর্যশীল করবে – উপনিষদীয় শিক্ষা

তুমি কি সবসময় সবকিছু দ্রুত পেতে চাও? ওয়াইফাই একটু স্লো হলেই রাগ হয়ে ফোনটা ছুঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে? অথবা বন্ধুদের সাথে প্ল্যান করে যদি কেউ লেট করে, মনে হয় ওদের আর কখনোই দেখবে না? তাহলে, হ্যালো! তুমি একা নও!

আমাদের এই ‘সব এখনই চাই’ প্রজন্মের জন্য ধৈর্য রাখা যেন এক মহাকাব্যিক চ্যালেঞ্জ। কিন্তু জানো কি? হাজার বছর আগে উপনিষদে ধৈর্যকে জীবনের এক মহাশক্তি হিসেবে দেখানো হয়েছে! আজ তোমার সাথে শেয়ার করব ৫টি উপনিষদীয় অভ্যাস, যা তোমাকে দিবে ইস্পাত কঠিন ধৈর্য এবং এক নতুন ‘জেন’ মোড!

১. শ্বাস নাও, জীবন তোমার দিকে দৌড়াচ্ছে না! (প্রাণায়াম)

হ্যাঁ, শ্বাস নেওয়া! শুনতে সাধারণ লাগছে? কিন্তু উপনিষদ বলে, নিয়ন্ত্রিত শ্বাস নেওয়া মানে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। যখন তুমি রেগে যাচ্ছ বা অধৈর্য হয়ে পড়ছ, তখন গভীর শ্বাস নাও। প্রাচীন ঋষিরা বলতেন, “যে নিজের শ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে নিজের ভাগ্যও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।”

 প্র্যাকটিস: ৪-৭-৮ টেকনিক ট্রাই করো: ৪ সেকেন্ড শ্বাস নাও, ৭ সেকেন্ড ধরে রাখো, ৮ সেকেন্ড ধরে ছেড়ে দাও। ম্যাজিকের মতো কাজ করবে!

২. সব কিছু তোমার নিয়ন্ত্রণে নেই, এটা মেনে নাও! (ঈশাবাস্য উপনিষদ)

আমরা সবকিছু কন্ট্রোলে রাখতে চাই, কিন্তু উপনিষদ বলে, “বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ তোমার হাতে নেই, বরং তুমি এর অংশ মাত্র।” তাই যদি কোনো কিছু তোমার মতো না চলে, মেনে নাও। জীবন একটু বিশৃঙ্খল হতেই পারে, তাই না?

 প্র্যাকটিস: যখন কিছু তোমার ইচ্ছামতো হচ্ছে না, নিজেকে বলো, “আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো, কিন্তু বাকিটা ছেড়ে দেব ব্রহ্মাণ্ডের ওপর!”

৩. তোমার চিন্তাকে অবজার্ভ করো, গিলে ফেলো না! (ধ্যান)

তুমি কি জানো, আমাদের মন প্রতি মিনিটে প্রায় ৫০টি চিন্তা করে? তাই ধৈর্য রাখতে হলে, প্রথমে তোমাকে শেখার হবে কিভাবে চিন্তাগুলোকে ‘দেখতে’ হয়, না যে প্রতিটা চিন্তাই তোমার দখলে নিয়ে নেবে!

 প্র্যাকটিস: প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে বসে থাকো এবং দেখো তোমার মনের মধ্যে কী চলছে। কোনো চিন্তা এলে, সেটাকে একটা মেঘের মতো ভেসে যেতে দাও। কয়েকদিনেই নিজেকে অনেক শান্ত অনুভব করবে!

৪. অপেক্ষা করো, কিন্তু হতাশ হয়ো না! (কর্মযোগ)

তুমি কি কখনো এমন কিছু চেয়েছ, যা অনেক দেরিতে পেয়েছ? মনে হয়েছে, “আমি এত কষ্ট করলাম, কিন্তু ফল পেলাম না!” উপনিষদ বলে, “কর্ম করো, ফলের আশা করো না।” কঠিন? হ্যাঁ। কার্যকরী? ১০০%!

 প্র্যাকটিস: যদি কিছু পেতে দেরি হয়, তাহলে ভাবো, “আমি চেষ্টা করব, কিন্তু ফল নিয়ে দুশ্চিন্তা করব না।” নিজের উপর বিশ্বাস রাখো!

৫. সত্যিকারের শক্তি হলো নম্রতা (অহিংসা ও ক্ষমা)

যদি কেউ তোমার ধৈর্যের পরীক্ষা নেয়, কী করবে? রেগে যাবে? নাকি প্রতিশোধ নেবে? উপনিষদ বলে, “ক্ষমাই হলো সবচেয়ে বড় শক্তি।” ধৈর্যশীল হতে হলে তোমাকে শিখতে হবে কিভাবে রাগ ছেড়ে দিতে হয়।

 প্র্যাকটিস: যখন কেউ তোমার ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে, তখন এক সেকেন্ড থামো, ভাবো, “আমি যদি এখন রেগে যাই, তাহলে কি এটা পরিস্থিতির উন্নতি করবে?” ৯০% ক্ষেত্রে উত্তর হবে: না!

শেষ কথা: তুমি কি চ্যালেঞ্জ নেবে?

এই ৫টি অভ্যাস যদি সত্যি অনুসরণ করো, তুমি ধৈর্যের এক নতুন স্তরে পৌঁছে যাবে! কিন্তু প্রশ্ন হলো, তুমি কি এগুলো ট্রাই করবে? নাকি আগের মতোই ‘রাগী’ মুডে থাকবে?

কমেন্টে জানাও, কোন অভ্যাসটা তুমি আজ থেকেই শুরু করতে যাচ্ছ!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top