৪টি উপায় কিভাবে উপনিষদ অনুযায়ী জীবনের লক্ষ্য ঠিক করবে

তুমি কি সেই মানুষগুলোর একজন, যাদের সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই মনে হয়, “আজকে কী করব?” অথবা ইনস্টাগ্রামের ফিড স্ক্রল করতে করতে মনে হয়, “আমার জীবনের লক্ষ্যটা আসলে কী?”

বেশ, তুমি একা নও! আজকের যুগে জীবনের লক্ষ্য খুঁজে পাওয়া যেন একটা বিশাল মিশন। কিন্তু জানো কি, হাজার বছর আগে উপনিষদে এই সমস্যার সমাধান লেখা ছিল? হ্যাঁ, ঠিক শুনেছ! প্রাচীন ঋষিরা আমাদের জন্য রেখে গেছেন জীবনের লক্ষ্য স্থির করার সহজ অথচ গভীর কিছু উপায়।

চলো, মজা করে, একটু স্যাটায়ার মিশিয়ে, সেই জ্ঞানকে আধুনিক জীবনে কীভাবে কাজে লাগানো যায় দেখে নিই!

১. “তুমি কে?” – আত্মানুসন্ধানের খেলা 

তুমি কে? “আমি তো সিমি, কলেজে পড়ি”, এই উত্তর না! উপনিষদ বলে, “আত্মানং বিদ্ধি” অর্থাৎ, “নিজেকে জানো”।

তুমি কি তোমার Instagram প্রোফাইল? নাকি তোমার Marksheet? আসল তুমি কে, সেটা খুঁজে বের কর।

 কীভাবে করবে?

  • প্রতিদিন সকালে পাঁচ মিনিট চোখ বন্ধ করে নিজেকে প্রশ্ন করো: “আমি কে?”
  • নিজের ভালো লাগা, খারাপ লাগাগুলো নিয়ে একটা জার্নালে লিখে রাখো।
  • নিজের ইচ্ছেগুলোকে ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে এক্সপ্লোর করো।

২. “বহির্ভার নয়, অন্তর্দৃষ্টি!” – নিজের ভেতরে ডুব দাও 

যখন চারপাশের সবাই বলছে, “ওই কোর্সটা করো”, “ওই চাকরিটা পেতে হবে”, তখন তুমি নিজের মনের কথা শোনো।

উপনিষদ বলে, “পরম সত্য অন্তরের মধ্যেই লুকিয়ে আছে”। জীবন নিয়ে যখন দ্বিধায় পড়ো, তখন বাইরের আওয়াজগুলো বন্ধ করো এবং নিজের হৃদয়ের কথা শোনো।

 কীভাবে করবে?

  • প্রতিদিন একটু ধ্যান (Meditation) করো।
  • দিনে অন্তত একবার সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বিরতি নাও।
  • যে কাজগুলো করলে মনে শান্তি আসে, সেগুলো করো।

৩. “তোমার ধর্ম খুঁজে বের করো” – নিজস্বতা বজায় রাখো 

ধর্ম মানে শুধু পুজো-অর্চনা নয়। এখানে ধর্ম মানে “Dharma”, তোমার আসল কর্তব্য।

উপনিষদ বলে, “স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ” অর্থাৎ, নিজস্ব ধর্ম পালন করাই শ্রেয়। তাই অন্যের মতো হওয়ার চাপে নিজেকে হারিয়ে ফেলো না।

কীভাবে করবে?

  • তোমার কি ছবি আঁকতে ভালো লাগে? নাকি লেখালেখিতে? সেটা নিয়ে কাজ করো।
  • বন্ধুদের ফলো করার বদলে, তোমার নিজস্ব স্টাইলে জীবন যাপন করো।
  • ভুল করতে ভয় পেও না। কারণ, ভুলের মধ্যেই তোমার সত্যিকারের “তুমি” লুকিয়ে আছে!

৪. “ত্যাগে শান্তি, লোভে নয়” – মনের ভার লাঘব করো 

আমরা প্রায়শই এমন লক্ষ্য তৈরি করি যা শুধুই বাহ্যিক সাফল্য নিয়ে ঘোরে, বেশি টাকা, বেশি ফলোয়ার, বেশি জনপ্রিয়তা। কিন্তু উপনিষদ বলে, “ত্যাগেন ভুঞ্জীথা” অর্থাৎ, ত্যাগের মাধ্যমে শান্তি পাওয়া যায়।

 কীভাবে করবে?

  • এমন লক্ষ্য তৈরি করো যা শুধু তোমার নয়, সমাজেরও উপকারে আসে।
  • “বেশি চাই, আরও চাই” মনোভাব ত্যাগ করো।
  • ছোট ছোট ভালো কাজের মাধ্যমে মনকে প্রশান্ত করো।

শেষ কথা: তোমার লক্ষ্য কি?

এখন বলো, তোমার জীবনের লক্ষ্য কি ঠিক হয়েছে? নাকি আরও ভাবতে হবে? উপনিষদের এই প্রাচীন জ্ঞানকে মনের গভীরে ঢুকিয়ে, একটু সময় নিয়ে নিজেকে জানো, নিজের লক্ষ্য স্থির করো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top