৫টি উপায় উপনিষদ অনুযায়ী কিভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে

তুমি কি কখনও নিজেকে আয়নার সামনে দেখে ভেবেছো, “ইশ! যদি আমি একটু বেশি আত্মবিশ্বাসী হতাম!” অথবা ক্লাসের সামনে কথা বলতে গিয়ে মনে হয়েছে, “পৃথিবীটা এখনই যদি গিলে ফেলত!”? ওহ হ্যাঁ, আমরা সবাই কখনো না কখনো এমন অনুভব করেছি। কিন্তু ভাবো তো, যদি তোমার ভেতরেই লুকিয়ে থাকে এক অদ্ভুত শক্তি, যা তোমাকে করে তুলবে অপরাজেয়?

শুনতে অবাস্তব লাগছে? না! উপনিষদ বলছে, “তুমি নিজেই তোমার শক্তির উৎস!” তাই, এবার আর কোনো মোটিভেশনাল ভিডিও নয়, বরং চল একবার দেখি, প্রাচীন ভারতের গভীরতম জ্ঞান কীভাবে তোমার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে!

১. “তুমি সেই!” – আত্মপরিচয় জানো

উপনিষদ বলে, “অহম্ ব্রহ্মাস্মি” – যার অর্থ, “আমি ব্রহ্ম, আমি অসীম।” বুঝলে কিছু? না? বুঝিয়ে বলছি!

এর মানে হলো, তুমি কোনো ছোট্ট সাধারণ মানুষ নও; তুমি বিশাল, তুমি শক্তিশালী! পরীক্ষার হলে, বন্ধুর সামনে, সোশ্যাল মিডিয়ায় – যেখানেই থাকো না কেন, নিজের ভেতরের শক্তিকে অনুভব করো। নিজেকে মনে করাও, “আমি সীমাহীন, আমি পারবো!” যখন তুমি নিজের সত্যিকারের পরিচয় জানবে, তখন ভয়, সন্দেহ, হীনম্মন্যতা দূর হয়ে যাবে।

 অ্যাকশন স্টেপ: প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলো, “আমি শক্তিশালী, আমি অসীম, আমি পারবো!”

২. “সংসার মায়া!” – অন্যের মতামতের ফাঁদে পড়ো না

তুমি কি কখনও ফ্রেন্ডস বা ইনস্টাগ্রামে স্ক্রল করতে করতে হঠাৎ ভাবো, “উফ! ওর মতো যদি হতে পারতাম!”? বা কেউ তোমার পোশাক নিয়ে কটূক্তি করলে সারা দিন সেটা নিয়ে মন খারাপ করো?

উপনিষদ কিন্তু স্পষ্ট বলেছে, “এ বিশ্ব এক মায়ার খেলা।” অর্থাৎ, মানুষের কথা, সমাজের স্ট্যান্ডার্ড – এগুলো সবই ক্ষণস্থায়ী, তোমার প্রকৃত সত্তা এদের চেয়ে অনেক বড়!” যদি তুমি সারাজীবন অন্যের মতামত নিয়ে ভাবো, তাহলে নিজের আত্মবিশ্বাস খেয়ে ফেলবে এই মায়ার দুনিয়া!

 অ্যাকশন স্টেপ: কেউ কিছু বললেই নিজেকে মনে করাও, “এই জীবন আমার, অন্যের কথায় চলবে না!”

৩. “ধ্যান করো, কারণ উত্তর তোমার মধ্যেই আছে!”

একবার কি এমন হয়েছে, তুমি এত চিন্তা করছো যে মাথার ভেতর যেন একটা ‘বিশেষ ঘোষণা'” চলছে, “আমি এটা পারবো না, আমি এটা পারবো না!”?

উপনিষদ কিন্তু বলছে, “তোমার সব উত্তর তোমার ভেতরেই আছে, শুধু সেটা শুনতে শেখো।” কিভাবে শুনবে? ধ্যান! ধ্যান মানে এই নয় যে হিমালয়ে চলে যেতে হবে; প্রতিদিন মাত্র ৫ মিনিট চুপচাপ বসে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করো। দেখবে, নিজের প্রতি বিশ্বাস তৈরি হচ্ছে।

 অ্যাকশন স্টেপ: প্রতিদিন সকালে ৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে নিঃশ্বাস নাও, শুধু নিজের শ্বাস নেওয়ার শব্দ শুনো। তুমি নিজের মধ্যেই তোমার আত্মবিশ্বাস খুঁজে পাবে!

৪. “কর্ম করো, ফল নিয়ে চিন্তা করোনা!”

তুমি কি এমন ক্যাটাগরির মানুষ যে পরীক্ষার আগে একবার পড়েই ভাবে, “উফ, যদি ফেল করি!” বা কিছু শুরু করার আগেই ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় পাও?

উপনিষদে বলা হয়েছে, “কর্মণ্যে বা অধিকারaste, মা ফলেষু কদাচন!”“তোমার কাজ করো, ফলের চিন্তা করোনা!”** জীবনটা কোনো ম্যাজিক শো নয় যে তুমি একবার ভাবলেই সব হয়ে যাবে। বরং কাজ শুরু করো, চেষ্টা করো, ফল যাই হোক, তুমি বিজয়ী!**

 অ্যাকশন স্টেপ: নতুন কিছু করার আগে নিজেকে বলো, “আমি শুধু আমার সেরাটা দেবো, ফল যাই হোক, আমার আত্মবিশ্বাস টিকে থাকবে!”

৫. “তুমি একা নও, সমগ্র বিশ্ব তোমার পাশে!”

নিজেকে কখনও একা মনে হয়? মনে হয়, “আমার পাশে কেউ নেই!”?

উপনিষদ বলে, “পুরুষঃ সর্বভূতেশু গূঢ়ঃ” – অর্থাৎ, “তুমি একা নও, সারা বিশ্ব তোমার ভেতরে আছে!” এটা মানে কী? তুমি ব্রহ্মাণ্ডেরই অংশ, তোমার সঙ্গে সব শক্তি আছে, শুধু সেটা অনুভব করতে শেখো!

 অ্যাকশন স্টেপ: যখনই মনে হবে তুমি একা, আকাশের দিকে তাকাও, একটা গাছকে ছুঁয়ে দেখো, প্রকৃতির সাথে সংযোগ অনুভব করো। তুমি কখনোই একা নও!

শেষ কথা – তুমি শক্তিশালী!

তুমি যদি মনে করো, “আত্মবিশ্বাস আমার মধ্যে নেই!”, তাহলে একটা কথা মনে রাখো – তোমার ভেতরেই সব শক্তি লুকিয়ে আছে। শুধু সেটাকে চিনতে হবে, গ্রহণ করতে হবে, আর বিশ্বাস রাখতে হবে!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top