মানসিক শান্তি কি কেবলই একটি মিথ? যখন নোটিফিকেশন, ইনবক্স, এবং ‘লাস্ট সিন’ আমাদের জীবনের শ্বাসরোধ করছে, তখন মনে হয় শান্তি মানে কেবলই রবিবারের লম্বা ঘুম! তবে উপনিষদের গোপন মন্ত্র জানলে, মানসিক শান্তি কিন্তু সত্যিই সম্ভব!
চলুন, দেখে নেই উপনিষদের শিক্ষা থেকে পাওয়া ৮টি সহজ অভ্যাস, যা আপনার জীবনে শান্তির পরশ আনবে।
১. “অহং ব্রহ্মাস্মি” মন্ত্রে নিজেকে ভালোবাসুন
উপনিষদ বলে, ‘অহং ব্রহ্মাস্মি’, অর্থাৎ ‘আমি ব্রহ্ম’। নিজেকে ছোটো ভাববেন না। মিরর সেলফি তোলার সময়, নিজের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলুন, ‘আমি অনন্য’। প্রতিদিন সকালে এই মন্ত্র জপুন, দেখবেন আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকবেন!
২. দানের অভ্যাস গড়ে তুলুন
“ইতাদানং” বা ‘এইটা দিন’, উপনিষদের এই বার্তা শুধু টাকার জন্য নয়। আপনার সময়, ভালোবাসা, এমনকি বন্ধুকে তার প্রিয় সিরিজের স্পয়লার না দিয়ে, এই দানও মানসিক শান্তি এনে দিতে পারে!
৩. ধ্যানের ম্যাজিক
মন শান্ত না থাকলে ধ্যান করুন। ৫ মিনিটের জন্য ফোন সাইলেন্ট মোডে রেখে, চোখ বন্ধ করে শুধু শ্বাস নিন। উপনিষদের মতে, অন্তর্মুখী হওয়াই সত্যিকারের শান্তির উপায়।
৪. সত্যবাদিতায় থাকুন অটুট
“সত্যমেব জয়তে”, অর্থাৎ সত্যই জয়ী। আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় একটু বাড়িয়ে বলা বা ফিল্টার লাগানো সহজ, কিন্তু সত্যের পথে থাকুন। সত্যি কথা বললে মিথ্যের চাপে মানসিক শান্তি হারাতে হবে না!
৫. সংযমী হোন
মনের ইচ্ছাগুলোকে একটু লাগাম দিন। ‘ওনলি ৫ মিনিট ইনস্টাগ্রাম’ বলে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় নষ্ট করবেন না। উপনিষদ বলে, সংযমের মাধ্যমে স্থিরতা আসে।
৬. কারও প্রতি বিদ্বেষ নয়
“মৈত্রীং সর্বভূতেষু”, সব জীবের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব রাখুন। ক্লাসের সেই মেয়েটা, যাকে দেখলে মনে হয় “ওহ, সে কেন এত পারফেক্ট?”, তার প্রতিও ভালোবাসা রাখুন। বিদ্বেষ আপনাকে নয়, তাকে নয়, শুধু আপনার মানসিক শান্তিকেই নষ্ট করবে!
৭. ক্ষণস্থায়ী জিনিসের পিছনে ছুটবেন না
“অন্যাস্মৃত্যু প্রাপ্তি”, উপনিষদ বলে, যা চিরস্থায়ী নয়, তা নিয়ে বেশি চিন্তা করবেন না। ট্রেন্ডিং ফ্যাশন, ভাইরাল কনটেন্ট, বা সাময়িক জনপ্রিয়তা, সবই ক্ষণস্থায়ী। স্থায়ী সুখ আসবে নিজের মূল্যবোধ থেকে।
৮. প্রকৃতির সান্নিধ্যে থাকুন
উপনিষদে প্রকৃতিকে ঈশ্বরের রূপ বলা হয়েছে। সময় বের করে প্রকৃতির মাঝে হাঁটুন, গাছের পাতা, পাখির ডাক, নীল আকাশ, সবকিছুতে ঈশ্বরকে অনুভব করুন।
শেষ কথা
মানসিক শান্তি কেবলই একটি স্বপ্ন নয়, বরং এটি বাস্তবে সম্ভব। শুধু প্রাচীন এই শিক্ষাগুলোকে জীবনের সাথে মেলাতে হবে। কোন অভ্যাসটি আজ থেকেই শুরু করবেন?মানসিক শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যান!