৮টি উপায় কিভাবে উপনিষদ অনুযায়ী জীবনের ভারসাম্য রাখবে

ক্লাসের প্রেজেন্টেশন, বাড়ির কাজ, বন্ধুরা ড্রামা করছে, ইন্সটাগ্রামের ফিডে সবার জীবন যেন একেবারে পারফেক্ট, এত কিছু সামলাতে সামলাতে কখন যে নিজের সাথে সময় কাটানো ভুলেই গেছো, তা টের পাওনি, তাই তো? মনে হচ্ছে যেন জীবনের সব ভার তুমিই একা টানছো? আরে, চিল! উপনিষদ আছে না?

যদি ভাবো, ‘উপনিষদ’ মানেই গুরুগম্ভীর কথা আর কঠিন সংস্কৃত শ্লোক, তবে ভুল ভাবছো! আসলে, এই প্রাচীন গ্রন্থগুলো আমাদের মনের সব দোলাচলের সহজ সমাধান জানে। আর মজার কথা হলো, এদের পরামর্শ শুনলে মনে হবে যেন একদম তোমার পাশের বন্ধুই পরামর্শ দিচ্ছে!

চলো, দেখি সেই ৮টি উপায়, যা উপনিষদ থেকে শিখে জীবনকে একটু “ব্যালেন্সড” করা যায়:

১. “অহং ব্রহ্মাস্মি”, নিজেকে ভালোবাসো

হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছো! উপনিষদ বলে, “অহং ব্রহ্মাস্মি”, মানে, তুমিই ব্রহ্ম। এটা কেমন যেন সুপারহিরো ডায়লগের মতো শোনাচ্ছে, তাই না? মানে, তোমার ভেতরেই সব শক্তি, সব সম্ভাবনা আছে। তুমি নিজেকে ছোট ভাবো কেন? প্রতিদিন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলো, “আমি পারব!” নিজেকে সময় দাও, নিজেকে ভালোবাসো!

২. “সন্তোষ”, মাঝেমধ্যে থামো, একটু নিঃশ্বাস নাও

যে দৌড়ে সবসময় ছুটছো, সেটা কি তোমাকে সত্যি খুশি করছে? উপনিষদ শেখায়, সন্তোষ বা তৃপ্তিই হলো আসল সুখ। হ্যাঁ, সবার মতো বড়ো বাড়ি, নতুন ফোন চাইতেই পারে, কিন্তু মাঝে মাঝে যা আছে, তাতেই খুশি হও। মনে রেখো, ‘চাই চাই’ ভাবটা কখনো শেষ হয় না!

৩. “ধ্যানমুলং গুরুর্মূর্তিঃ”, মেডিটেশন করো

যতই ব্যস্ত হও না কেন, দিনের ১০ মিনিট শুধু নিজের জন্য রাখো। উপনিষদ বলে, ধ্যান (মেডিটেশন) মনকে শান্ত রাখে। এই আধুনিক যুগের হইচই থেকে নিজেকে একটু সরিয়ে নাও। প্রাতঃকালে বা রাতে, শান্ত জায়গায় বসে ধ্যান করো। দেখবে, মনের জট খুলতে শুরু করবে।

৪. “ত্যাগেন ভুঞ্জীথাঃ”, অপ্রয়োজনীয় জিনিস ছেড়ে দাও

তুমি কি জানো, শুধু ফিজিক্যাল ক্লাটার না, মেন্টাল ক্লাটারও জীবনের ভারসাম্য নষ্ট করে? উপনিষদ বলে, ত্যাগের মধ্যে আসল সুখ। পুরনো কষ্ট, টক্সিক সম্পর্ক, অপ্রয়োজনীয় সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং, এসব ছেড়ে দাও! দেখবে, হালকা লাগবে!

৫. “সহনম্”, ধৈর্য ধরো

তোমার জীবনের সব সমস্যার সমাধান কি রাতারাতি পাবে? না! উপনিষদ শেখায়, সহনম্ বা ধৈর্য ধরাই হলো আসল শক্তি। জীবনে ওঠা-পড়া থাকবেই, কিন্তু সেই ওঠা-পড়ার মাঝেই নিজেকে স্থির রাখার বিদ্যা শিখো।

৬. “অস্তেয়”, অন্যের সাথে তুলনা কোরো না

ইন্সটাগ্রামে সবার জীবন ঝকঝকে মনে হলেও, বাস্তবটা কিন্তু ঠিক তেমন নয়! উপনিষদ বলে, অস্তেয় মানে হলো, অন্যের জিনিস চাইবে না। মানে, অন্যের জীবনের সাথে তোমার জীবন তুলনা কোরো না। তোমার নিজের গল্পটাই একদম ইউনিক!

৭. “সত্যম্”, নিজের সাথে সত্য থাকো

নিজেকে নিয়ে মিথ্যে বলে কি লাভ? তুমি যেমন, ঠিক তেমনই থাকো। উপনিষদে বলা হয়েছে, সত্যম্ বা সত্যবাদিতাই জীবনের সবচেয়ে বড়ো গুণ। নিজের স্বপ্ন, ইচ্ছা, কষ্ট, সব নিয়ে নিজের সাথে সত্য থাকো।

৮. “সেবায়াম্”, অন্যদের সেবা করো

কখনো খেয়াল করেছো, যখন তুমি কারো সাহায্য করো, তখন ভেতরে একটা অদ্ভুত শান্তি আসে? উপনিষদ বলে, সেবা বা অন্যের উপকার করাই আসল ধর্ম। শুধু নিজের জন্য না, চারপাশের মানুষের জন্য কিছু করো। দেখবে, জীবনের ভারসাম্য আপনা থেকেই ঠিক হয়ে যাবে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top