৭টি উপায় কিভাবে উপনিষদ অনুযায়ী আত্মবিশ্বাস বাড়াবে 

ধরো এমন একটা দিন…

তুই সকালে ঘুম থেকে উঠলি, মেসেজ খুলিস ,  বন্ধুদের প্ল্যানে তোকে বাদ দিয়ে আড্ডা।
ইনস্টায় ঢুকলি ,  সবাই যেনো পারফেক্ট, তোর লাইফটাই শুধু পিছিয়ে।
ক্লাসে কেউ তোর কথা শুনে না, জিমে গিয়েও মনে হয় বডি তোর না, বোঝা একটাই, “আমি বোধহয় কিছুই পারি না…”

আরে ভাই, এটা শুধু তুই না, আমরা সবাই এই ফিলিংটার ভিকটিম। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ,  এটাই কি রিয়েল তোর “তুই”?

এইখানেই ঢুকে পড়ে উপনিষদের টাইমলেস জ্ঞান ,  তোর ভিতরের আসল তোর সাথে তোকে রিইনট্রোডিউস করাতে।

 সমস্যাটা আসলে কী?

  • আত্মবিশ্বাস নামক জিনিসটা যেনো একটা ফোনের ব্যাটারি ,  মাঝে মাঝেই চার্জ শেষ হয়ে যায়।
  • বাইরের রেজাল্ট, লোকের রিভিউ, সোশ্যাল মিডিয়া লাইকস এগুলো দেখে নিজের ভ্যালু মাপিস।
  • সারাক্ষণ ভাবিস “আমি কীভাবে ইমপ্রেস করবো?”, কিন্তু নিজের মনটা একবারও জিজ্ঞেস করিস না, “আমি কে?”

 এই disconnect এর কারণেই আত্মবিশ্বাসটা কমে যায়।

 উপনিষদ কী বলে?

“আত্মানং বিদ্ধি” ,  “তুই নিজের আত্মাকে চিন।”

উপনিষদ বলে, তুই শরীর না, তুই নাম না, তুই রেজাল্টও না। তুই ‘আত্মা’ ,  যা শক্তি, শান্তি আর সাহসের অদম্য উৎস।
আর একবার যখন এই রিয়েল তোর সাথে কানেক্ট করবি, আত্মবিশ্বাস অটো অন হয়ে যাবে।

১. “নিজেকে জানাই হলো রিয়েল সুপারপাওয়ার”

উপনিষদ বলে: “যে আত্মাকে জানে, তার কোনো ভয় নেই”

🛠️ টাস্ক: একদিন ফোন অফ করে ৩০ মিনিট শুধু একটা প্রশ্ন নিয়ে বস ,
“আমি কে, যদি আমার ইনস্টা, স্কুল, ফ্যামিলি, কিছুই না থাকত?”
জার্নাল কর, যা মনে আসে। এতে এক ধরনের ভেতরের কন্ট্রোল ফিরে আসবে।

২. “তুই তোর কম্পিটিশন না, তুই তোর কানেকশন”

“দ্বিতীয়ত্‌ নেই ,  একেই আত্মা বলে”

 বাইরের লোকদের সাথে তুলনা করা বন্ধ কর।
তুই নিজে একটা ইউনিক মিশন নিয়ে এই পৃথিবীতে এসেছিস।

 টাস্ক: রোজ সকালে নিজের সাথে একটাই কথা বল ,
  “আমি ইউনিক। আমি তুলনাহীন।”

৩. “ফেল করেছিস? ভালো!” ,  এটা আত্মাকে জাগানোর সুযোগ

“যে কর্মফলে আসক্ত নয়, সে ধ্যানী”

ফেল মানে ব্যর্থতা না ,  এটা একটা ইনভাইটেশন:
  “আরে ভাই, তোর আসল শক্তি তো বাইরের সাফল্য না ,  ভিতরের একাগ্রতা।”

 টাস্ক: যেদিন কিছুতেই কিছু হয় না, সেদিন নিজেকে বল ,
“এই পরিস্থিতিও আমাকে তৈরি করছে।”

৪. “ধর্ম মানে রোলপ্লে, শুধু নিজেরটাই ঠিকমতো কর”

“স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ”

তোর কাজ একটাই ,  নিজের ধম (স্বধর্ম) পালন।
তুই কারও বাবা, বন্ধু, ছাত্র ,  যেই ভূমিকাতেই থাক, সেটা ১০০% দিয়ে কর।

 টাস্ক: দিনে ৩টা রোল লিখে ফেল, যেগুলো তুই এখন প্লে করছিস।
তারপর জিজ্ঞেস কর ,  “এই রোলে আমি আরও ভালো কীভাবে হতে পারি?”

৫. “লোকের অপিনিয়ন = বাইরের আওয়াজ। নিজের ভিতর শুন”

“যে আত্মাকে জানে, সে জয়ী”

লোক কী বলল ,  সেটা তোর সত্যি হতে পারে না।
তোর সত্যি একটাই ,  তুই কে, তোর ইন্টেনশন কী।

 টাস্ক: কোনো নেগেটিভ কমেন্ট পড়লে নিজেকে প্রশ্ন কর ,
  “এই কথাটা কি আমার আত্মার সাথে মিলে?”
না মিললে ,  ডিসমিস করে দে, ভাই।

৬. “নীরবতা মানে দুর্বলতা না, গভীরতা”

“যে জ্ঞানী, সে কথা কম বলে”

ভালো লোক কম কথা বলে ,  কারণ তারা ভিতরে অনেক কিছু নিয়ে ভাবছে।
তুইও নিজেকে শুনে দেখ, ভিতরের জায়গা অনেক শক্ত।

 টাস্ক: দিনে ৫ মিনিট একদম চুপচাপ বসে থাক ,  ফোন ছাড়া।
দেখবি মাইন্ড এক্সট্রা পাওয়ারফুল হয়ে উঠবে।

৭. “আত্মবিশ্বাস মানে আমি পারব, কারণ আমি আছি”

“আত্মা অজেয়, অভেদ্য, অদাহ্য”

তোর ভিতরের আত্মা কোনো ভয় পায় না। কারণ সে কখনো নষ্ট হয় না, কাটা যায় না, পোড়েও না।
এটাই হোক তোর ফাউন্ডেশন।

 টাস্ক: নিজেকে রোজ মনে করিয়ে দে ,
  “আমি আত্মা ,  অসীম, অজেয়, অদম্য।”

 আজই শুরু কর ,  এক মিনিটের স্পিরিচুয়াল এক্সারসাইজ

 ‘আহম্ ব্রহ্মাস্মি’ মন্ত্র + ব্রিদিং:

১. চোখ বন্ধ কর
২. নাক দিয়ে লম্বা শ্বাস নে
৩. মনে মনে বল ,  “আহম্” (আমি)
৪. শ্বাস ছাড়ার সময় বল ,  “ব্রহ্মাস্মি” (আমি ব্রহ্ম, আমি অসীম)
৫. ৭ বার কর

 এই প্র্যাকটিসটা তোর ব্রেইনকে রিস্টার্ট করবে, আর আত্মাকে রিমাইন্ড করাবে ,  “তুই কেবল লুক না, তুই আলোর মতো।”

 ভাই, মনে রাখ

তোর আত্মবিশ্বাস আসবে না বাইরের চিয়ারলিডিং থেকে,
আসবে ভিতরের কানেকশন থেকে।
উপনিষদ তোর জন্য একটা হ্যাক কোড ,  যেটা জানলে তুই নিজেকে হারাবি না, বরং নিজের ভিতরেই সব পেয়ে যাবি।

তোর ভেতরের শিব জাগে উঠুক ,
তুই আত্মা, তুই শক্তি, তুই সব পারবি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top