ভাব, একদিন ক্লাসে বা ভার্চুয়াল গেমের পার্টিতে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারছিস। সবার হাসাহাসি, মজা চলছে। কিন্তু তুই? তোর ভিতরে একটা অদ্ভুত খালি ফিলিং। মনে হচ্ছে, তুই ‘ফিট ইন’ হচ্ছিস না। নিজের চেহারা, স্কিল, ফ্যামিলি, রিলেশনশিপ, সব কিছুতেই একটা ইনসিকিওরিটি।
“আমার তো কিছুই ঠিকঠাক নেই”, এই কথাটা নিজের মনে কেঁদে কেঁদে বলিস।
চিন্তা করিস না, ভাই। এই ফিলিংটা একদম নরমাল। আর এই সমস্যার সলিউশন তোর ভেতরেই লুকিয়ে আছে, উপনিষদে, হাজার বছর আগেই এর উত্তর লেখা ছিল।
সমস্যাটা কোথায়?
আজকের সোশ্যাল মিডিয়া দুনিয়ায় সবাই নিজের বেস্ট ভার্সন দেখায়। কিন্তু বাস্তবে কেউই ১০০% হ্যাপি না।
তুই যা দেখিস তা হোলো ফিল্টার, কিন্তু যা ফিল করিস তা হোলো রিয়েল।
এই ফিলিং, নিজেকে ছোট মনে হওয়া, নিজের ভ্যালু না বুঝতে পারা, একটা মেন্টাল ট্র্যাপ। এই ট্র্যাপ থেকে বের না হতে পারলে জীবন জাস্ট একটা ইনসিকিওরিটির দৌড়ে আটকে যাবে।
উপনিষদ কী বলে?
উপনিষদ বলে, “তুমি নিজেই ব্রহ্ম” (অহং ব্রহ্মাস্মি) , মানে, তুই নিজেই তো ইন্টারনাল পাওয়ার হাউস। তুই যেটা ভাবিস, সেটাই তোর রিয়েলিটি তৈরি করে।
এই মানসিক গেম বুঝতে পারলেই তুই ‘আউটসাইড ভ্যালিডেশন’ ছাড়া নিজের ভ্যালু বুঝতে শিখবি। এবার চল, দেখে নিই উপনিষদ অনুযায়ী ৫টি উপায় কিভাবে নিজেকে সত্যিকারের ভালোবাসা যায়।
১) নিজের ভেতরের ‘Witness’ হয়ে যা।
উপনিষদ বলে:
“দ্রষ্টা ভাবো, ক্রীড়া নয়।”
(Translation: Be the observer, not the player.)
তোর মন যা যা নেগেটিভ চিন্তা ছুঁড়ে দেয়, সব কিছুকে সিম্পলি ‘দেখ’, জাজ করিস না।
রাগ, হিংসে, ইনসিকিওরিটি, এগুলো তোর ভেতরের পাসিং ক্লাউড। তুই ক্লাউড না, তুই তো আকাশ।
২) নিজের ইমোশনকে ‘ডিট্যাচ’ কর।
উপনিষদ বলে:
“ন হি নানাস্তি কিনচন” , মানে, সবকিছু একটাই, তোর চিন্তা জাস্ট ফর্ম বদলায়।
ইমোশনগুলোকে গেমের স্কোরের মতো ভাব। হারলি সমস্যা নেই, জিতলেই বাহবা, কিন্তু তুই তো গেমটাই খেলছিস। তুই স্কোর না, তুই প্লেয়ার।
এই রিয়ালাইজেশন ই ভেতরের স্ট্রেংথ তৈরি করে।
৩) নিজের ‘স্বধর্ম’ খুঁজে বের কর।
উপনিষদ বলছে:
“স্বধর্মে নিধনং শ্রেয়ঃ”
(Translation: নিজের কাজ, নিজের পথ সেরা, even if imperfect.)
বন্ধুরা কী করছে সেটা নিয়ে কম্পেয়ার করিস না। তোর নিজের স্টাইল, নিজের গোল সেট কর। জাস্ট বুঝে যা, তুই অন্য কারও কপি না।
৪) মনকে ‘ডিসকানেক্ট’ করার অভ্যাস কর।
উপনিষদ বারবার বলে:
“যথা পিন্দে তথা ব্রহ্মান্ডে”
(Translation: যেটা তোর ভিতরে, সেটাই বাইরেও।)
দিনে অন্তত ৫ মিনিট ফোন ছেড়ে, মিউজিক বন্ধ করে, নিঃশব্দে বসে থাক। মন যা যা ভাবছে, দেখতে থাক, কিছুই করতে হবে না। এই ছোট্ট অভ্যাস তোর ব্রেনকে পিসফুল এবং ক্লিয়ার বানাবে।
৫) নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দে, “আমি ই যথেষ্ট”।
উপনিষদ বলে:
“সত্যম্ জ্ঞানম্ অনন্তম্ ব্রহ্ম।”
তুই যদি সত্যিকে দেখিস, তবে বুঝবি তোর ভিতরেই অসীম শক্তি আছে।
দিনের শুরুতে নিজেকে বল:
“আমি যা আছি, তাই যথেষ্ট। আমি এই মুহূর্তে সম্পূর্ণ।”
এই অ্যাফার্মেশন তোর কনফিডেন্স লেভেল ১০x বাড়িয়ে দেবে।
Bonus: আজ থেকেই শুরু কর ‘Spiritual Hack’
মন্ত্র: “সো হম।”
(Translation: “আমি সেটাই, আমি সেই ব্রহ্ম।”)
কাজ কীভাবে করবি?
১) চোখ বন্ধ কর।
২) নিঃশ্বাস নিতে নিতে মনে বল, “সো”।
৩) নিঃশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বল, “হম”।
দিনে মাত্র ৩ মিনিট। ইনস্ট্যান্ট কুলনেস, ক্লিয়ার চিন্তা, আর অটো কনফিডেন্স, তোর মাথায় ঢুকে যাবে।
শেষ কথা:
বন্ধু, লাইফের সবচেয়ে বড় ফাইট বাইরের সাথে নয়, ভেতরের সাথে। উপনিষদ তোর সেই ফাইটের ম্যাপ অনেক আগেই বানিয়ে রেখেছে।
তুই নিজেকে চিনতে পারলেই, নিজেকে ভালোবাসতে শিখবি।
আর তখন তোর পুরো পৃথিবী পাল্টে যাবে।
তোর নতুন যাত্রা শুরু হোক আজ থেকেই।