ধর, তোর জীবনে হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপে একটাই মেসেজ সব ওলট-পালট করে দিল…
“দোস্ত, তোর গার্লফ্রেন্ড তো অরিজিৎ-এর সাথে টাইম পাস করতেছে।”
তুই থমকে গেলি। মনটা হঠাৎ ব্ল্যাঙ্ক। চ্যাট ক্লোজ করলি, ইনস্টাগ্রাম খুললি, রিলস স্ক্রল করতে করতে নিজের ভেতরটা অদ্ভুত খালি খালি লাগছে। বন্ধুদের সঙ্গে আউটিং, ফ্যামিলির সঙ্গে কথাবার্তা, সব কেমন যেন কাঁটা হয়ে গেছে।
সত্যি বললে, এই ফিলিংটা রিলেটেবল, তাই তো?
কিন্তু সমস্যা জানিস কোথায়?
সমস্যা শুধু “হার্টব্রেক” না, বরং নিজের ভিতরে ‘আমি কে?’, এই প্রশ্নটা হারিয়ে যাওয়া!
তুই নিজেকে গেমিং, মুভি, মেমস, স্টোরি, আর হরর ভ্লগে ভুলিয়ে রাখছিস, কারণ বাস্তবটা হ্যান্ডেল করা যায় না।
আত্মবিশ্বাস নাই। ভরসা নাই। জীবনটা কেমন যেন অথর্ব মনে হয়।
আর ঠিক এইখানেই ঢুকছে উপনিষদ, যা তোর মতোই যুবকদের জন্য এক্স্যাক্টলি তৈরি, যারা হারিয়ে গেছে নিজের চিন্তায়, ভালোবাসায়, স্ট্রাগলে।
উপনিষদ বলছে,
“আত্মা অজন্মা, অবিনশ্বর। শরীর গেলেও সে থাকে।”
(কঠ উপনিষদ ২.১৮)
মানে? তুই যেটাকে নিজের “আমি” ভাবিস, ওই কেশ স্টাইল, ইনস্টা প্রোফাইল, বা কারা তোর সাথে আছে, এসব কিছুই আসল “তুই” না!
আসল তুই… ভেতরে। ধ্যানে, নিরবতায়, নিজের চিন্তায়।
আর সেই আসল তুইকে খুঁজে পেলেই, জীবন রিস্টার্ট দিতে পারবি, নতুন রকমে। শক্তিশালী, শান্ত, এবং ঝাক্কাস!
তো, এখন যা প্রমিস করছি, এখানে পাচ্ছিস ৫টা রিয়েল ও উপনিষদিক হ্যাক, যেগুলো দিয়ে তুই তোর লাইফে নতুন শুরু করতে পারবি:
১. “আমি কে?”, এই প্রশ্নটা প্রতিদিন নিজেকে জিজ্ঞাসা কর
সকালবেলা উঠে নিজেকে একটা সোজা প্রশ্ন কর:
“আমি এই শরীর না হলে কে?”
উপনিষদে আছে:
“তুমি আত্মা, শরীর নয়। আত্মা চিরন্তন ও সর্বশক্তিমান।”
(বৃহদারণ্যক উপনিষদ ৪.৪.৫)
কারণ? যখন তুই নিজেকে শুধু শরীর-চেহারা-স্ট্যাটাস মনে করিস, তখন যা কিছু হারায়, মনে হয় তুই নিজেই শেষ!
কিন্তু যখন বুঝবি তুই আত্মা, তখন যে কোনও হার্টব্রেক, ফেইলিওর, অপমান, সব সামলে নিতে পারবি।
২. ডিজিটাল ডিটক্স না, বরং ‘মন’ ডিটক্স কর
ইউটিউবের ‘মোটিভেশনাল স্পিকার’ দেখে তুই যতই হাইপড হ, ১৫ মিনিট পর আবার সেই স্ক্রলিং লাইফে ফিরিস।
উপনিষদ বলে:
“যে মনকে জয় করতে পারে, সেই প্রকৃত বিজয়ী।”
(মুন্ডক উপনিষদ ৩.১.৫)
প্র্যাকটিক্যাল হ্যাক:
প্রতিদিন ৫ মিনিট চোখ বন্ধ করে নিজের মনটাকে পর্যবেক্ষণ কর। কী ভাবছিস, কেন ভাবছিস, just watch it silently.
এটা তোর ভিতরের “আত্ম-সেলফ” কে জাগাতে শুরু করবে। রিলস নয়, রিয়েল তুই জাগবে।
৩. বন্ধুত্বে হোক ‘সতসঙ্গ’, টক্সিক না
তোর আশেপাশে কারা আছে, সেটা তোর জীবন বদলাতে পারে।
উপনিষদে বলা আছে:
“যার সঙ্গে মেলামেশা করিস, তার গুণ তোর মধ্যেও ঢুকে পড়ে।”
(ছান্দোগ্য উপনিষদ ৮.৭.১)
তাই বেছে নে:
- যে তোর সৎ কথা বলে
- যে নিজের লাইফ নিয়েও সচেতন
- যে তোর আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, না কমায়
টক্সিক রিলেশন মানেই তোর আত্মার উপর অ্যাটাক। কাট দ্যাট শিট!
৪. ‘ফেল’ মানে সবশেষ না, ওটাই তোর শুরু
যখন কেউ বলে “তুই পারবি না”, উপনিষদ বলছে:
“যে জানে সে আত্মা, সে কখনও হারে না।”
(ঈশ উপনিষদ ৩)
ফেল করা মানে শুধুই গেম ওভার না। বরং লাইফের লেভেল আপ করার আগে দরকার একটা ‘রেস্টার্ট বাটন’। ওই ফেলটাই।
রিয়েল টক টিপস:
- একটা ব্যর্থতা মানেই, universe তোকে reroute দিচ্ছে
- ওটাই তোর মূল চরিত্র গঠনের সময়
- শক্তির উৎস অভ্যন্তরে, নিজের আত্মাকে জানলে, হারে না
৫. ‘ধর্ম’ মানে boring রিচুয়াল না, বরং নিজের দায়িত্ব জেনে কাজ কর
ধর্ম মানে টিকলু পরে বসে থাকা না।
উপনিষদ বলছে:
“ধর্ম মানে আত্মাকে বুঝে জীবনের সত্য পথে চলা।”
(বৃহদারণ্যক উপনিষদ ১.৪.১৪)
নিজের ধর্ম মানে,
- ছাত্র হলে পড়াশোনা করা
- ভাই হলে পরিবারকে রক্ষা করা
- মানুষ হলে অন্যকে সম্মান করা
- নিজের শক্তিকে নিজের ভেতর থেকে জাগানো
অর্থাৎ নিজের রোল বুঝে একে অপরের পাশে থাকা, এই হ’ল ধর্ম।
শেষ কথা: জীবনে নতুন শুরু করার জন্য একটাই জিনিস লাগে, নিজেকে চিনতে শেখা
তোর ভেতরে আগুন আছে। কিন্তু ভুল রাস্তা ধরে হাঁটছিস।
চল, একটুকু থামি… গভীর নিঃশ্বাস নিই… আর করে ফেলি এই ছোট্ট স্পিরিচুয়াল এক্সারসাইজ
“আমি কে?” রিফ্লেকশন রিচার্জ – মাত্র ৩ মিনিট
Step ১: একা কোথাও বস
Step ২: চোখ বন্ধ কর
Step ৩: ৩ বার ধীরে বল –
“অহং ব্রহ্মাস্মি” (আমি ব্রহ্ম, অর্থাৎ আমি চিরন্তন শক্তি)
Step ৪: নিজেকে অনুভব কর, শরীরের বাইরে এক শান্ত শক্তি হিসেবে।
তুই কোনো relationship, কোনও ফেইলিওর, কোনও হেট কমেন্ট না, তুই তুই। পূর্ণ। পারফেক্ট। পাওয়ারফুল।
এখন তোর পালা!
এই পাঁচটা উপায়ে তুই উপনিষদিক দাদা স্টাইলে নিজের জীবন একেবারে নতুনভাবে শুরু করতে পারবি।
আত্মাকে চিনে, ভয়কে হারিয়ে, নিজের পথ নিজেই তৈরি করে নে।
তুই একটাই জীবনে জন্মাস না, তুই প্রতিটা মুহূর্তে নতুন জন্ম নিতে পারিস।
দাদা সাইনে আউট দিলো।
তুই শুরু করে দে।