৪টি উপায় কিভাবে উপনিষদ অনুযায়ী নিজের মত প্রকাশ করবে

বন্ধুরা তোমাকে ওভারটক করে? পরিবারের সামনে নিজের মত বলতে গেলেই গলা কাঁপতে শুরু করে? নিজের চিন্তাভাবনাগুলো কেমন যেন হারিয়ে যায়?

ঘাবড়াবার কিছু নেই, কারণ তোমার ভেতরে যে অদম্য শক্তি লুকিয়ে আছে, তা হয়তো তুমি এখনো আবিষ্কার করোনি! আর সেই শক্তিকে জাগিয়ে তুলতে পারে প্রাচীন ভারতের এক অসাধারণ দর্শন, উপনিষদ।

হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছ! এই কয়েক হাজার বছর পুরনো গ্রন্থ শুধু সন্ন্যাসীদের জন্য নয়, বরং আমাদের মতো আধুনিক যুগের কনফিউজড কিন্তু ডিটারমাইন্ড মেয়েদের জন্যও ভীষণ কাজে আসে। উপনিষদ আমাদের শেখায় কীভাবে আত্মবিশ্বাসী হওয়া যায়, কিভাবে নিজের ভাবনা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা যায়, এবং কীভাবে সত্যের শক্তিতে অটল থাকা যায়।

তাহলে আর দেরি কেন? চলো জেনে নিই ৪টি শক্তিশালী উপায়, যার মাধ্যমে তুমি নিজের মত প্রকাশ করতে পারবে নির্ভয়ে ও আত্মবিশ্বাসের সাথে!

১. “তুমি নিজেই তোমার শক্তির উৎস” – আত্মাকে জানো, আত্মবিশ্বাস আসবে!

(“আত্মানং বিদ্ধি” – নিজেকে জানো, উপনিষদ)

তুমি কি কখনো মনে করেছ, “ইস, যদি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের মতো স্মার্ট হতাম!” বা “ওর মতো কথা বলতে পারলে দারুণ হতো!”? STOP! তুমি যেমন, তেমনটাই অসাধারণ!

উপনিষদ বলে, তুমি কেবল তোমার বাহ্যিক রূপ নও, তোমার আসল শক্তি তোমার ভেতরেই আছে। তুমি যদি নিজের আত্মাকে (সত্তাকে) চিনতে পারো, তাহলে তোমার আত্মবিশ্বাস স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে।

কী করো:

  • প্রতিদিন ৫ মিনিট আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সাথে কথা বলো।
  • নিজের শক্তিগুলো লিখে রাখো (যেমন: “আমি সৃজনশীল”, “আমি ধৈর্যশীল”, “আমি ভালোভাবে যুক্তি দিতে পারি”)।
  • নিজের ভেতরের কণ্ঠস্বরের ওপর বিশ্বাস রাখো।

 যখন তুমি নিজেকে জানবে, তখন কেউ তোমাকে দমিয়ে রাখতে পারবে না!

২. “সত্যের ওপর দাঁড়াও, পৃথিবী তোমার কথা শুনবে!”

(“সত্যমेव জয়তে” – সত্যই বিজয়ী, উপনিষদ)

তুমি কি কখনো এমন কথা বলেছ যা আসলে তোমার নিজের বিশ্বাস না? শুধুমাত্র গ্রুপের সাথে মিশতে, বা কাউকে খুশি করতে? STOP DOING THAT!

উপনিষদ বলে, সত্যের শক্তি অপরিসীম। সত্য বললে শুরুতে কিছু মানুষ অস্বস্তি বোধ করলেও, শেষ পর্যন্ত সবাই সত্যের মূল্য দেয়। তাই যদি নিজের মত প্রকাশ করতে চাও, তবে যা বিশ্বাস করো, সেটাই বলো!

 কী করো:

  • কথা বলার আগে নিজেকে প্রশ্ন করো: “আমি যা বলতে যাচ্ছি, সেটা আমার সত্যিকারের মতামত কিনা?”
  • ভয়ের কারণে কারো সঙ্গে হ্যাঁ-তে হ্যাঁ মিলিও না, নিজের ভাবনাগুলোকে সাহসের সঙ্গে প্রকাশ করো।
  • বিতর্ক বা মতবিরোধ হলে ঠান্ডা মাথায়, যুক্তি দিয়ে নিজের বক্তব্য দাও।

 যখন তুমি সত্যের ওপর দাঁড়াবে, তখন তোমার কণ্ঠ স্বয়ংক্রিয়ভাবে দৃঢ় হয়ে উঠবে!

৩. “নিজেকে প্রকাশ করো, কিন্তু অহংকারকে দূরে রাখো”

(“ব্রহ্ম বিদ্যা দদাতি বিনয়ম্” – জ্ঞান নম্রতা শেখায়, উপনিষদ)

নিজের মত প্রকাশ করা মানে এই নয় যে, অন্যকে ছোট করতে হবে বা জোর করে নিজের মত চাপিয়ে দিতে হবে। উপনিষদ বলে, যে সত্যিকারের জ্ঞানী, সে নম্র হয়, কারণ সে জানে – শেখার কোনো শেষ নেই!

কী করো:

  • নিজের বক্তব্য বলার সময় আত্মবিশ্বাসী থেকো, কিন্তু অন্যের মতামতকেও সম্মান দাও।
  • যুক্তির মাধ্যমে বোঝাও, কাউকে অপমান করো না।
  • “আমি যা বলছি, সেটাই ১০০% ঠিক” – এমন অ্যাটিটিউড এড়িয়ে চলো।

 যখন তুমি নম্রতার সাথে নিজের বক্তব্য দেবে, তখন সবাই তোমার কথা গুরুত্ব দেবে!

৪. “ভয় ত্যাগ করো, কারণ তুমি সীমাহীন!”

(“অভয়ং ব্রহ্ম সংস্থানম্” – নির্ভয় হও, উপনিষদ)

তুমি কি কখনো ভেবে দেখেছ, কেন কিছু মানুষ এত সহজে নিজের কথা বলতে পারে? কারণ তারা ভয় পায় না!

ভয় আমাদের কণ্ঠকে রুদ্ধ করে দেয়, আমাদের চিন্তাকে জটিল করে তোলে। কিন্তু উপনিষদ বলে, আমরা প্রত্যেকেই এক সীমাহীন শক্তির অংশ, এবং আমাদের কিছুই ভয় পাওয়ার নেই!

 কী করো:

  • নিজেকে বলো: “আমার কথা গুরুত্বপূর্ণ!”
  • ভয়ের কারণে নিজের ভাবনাকে চেপে রেখো না।
  • কোনো কিছু বলার আগে একবার গভীর শ্বাস নাও, এবং আত্মবিশ্বাসের সাথে বলো!

 যখন তুমি ভয়ের শিকল ভাঙবে, তখন তোমার কণ্ঠস্বর আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে!

 শেষ কথা: এবার তুমি কি নিজের মত প্রকাশ করবে?

তুমি যদি সত্যিই চাও যে মানুষ তোমার কথা শুনুক, তাহলে আজ থেকেই নিজেকে জানার যাত্রা শুরু করো, সত্যের ওপর দাঁড়াও, নম্রতা শেখো, আর ভয়কে ঝেড়ে ফেলো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top